হে রাসুল!
আমায় ক্ষমা করো। ওরা তোমায় ওদের বিষাক্ত নখর দ্বারা আঘাত করলো। বিদঘুটে হাসি হেসে আড়ালে সটকে পড়লো। আমি তোমার শা’ন রক্ষা করতে পারিনি। তবে আমি প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম। আল্লাহু আকবারের আওয়াজ তুলে বুক উঁচিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করতে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু দূরত্ব আমার পা’য়ে শেকল দিলো। আমি হেঁচড়ে এগোতে চাইলাম। শেকল ভেঙে উঠে দাঁড়াতে চাইলাম। বাস্তবতা আমাকে জাপটে ধরলো। আমি হাত-পা ছুড়লাম। ছাড়ো ছাড়ো বলে চিৎকার জুড়লাম। ভৌগোলিক পরিমণ্ডল আমার হাত-পা বেঁধে ফেললো। ভাগ্য আমার কানে বিশ্রী কন্ঠে বিষ ঢেলে বললো ‘তুই ওতো সৌভাগ্যবান নস! শাতেমে রাসুলের রক্তে স্নান করার ভাগ্য কি তোর আছে?’ আমি নিরব আর্তচিৎকার করলাম।
হে প্রিয়!
আমায় ক্ষমা করো। আমি আমার জন্মভূমির নিরবতা ভাঙ্গতে অক্ষম। আমার শাসকগোষ্ঠী তোমার অপমানে বিন্দুমাত্রও বিচলিত নয়। আমি লজ্জিত।
উঁচু উঁচু দালান-কোঠার এই শহরে বসে তোমার সুন্দর ঐ চেহারায় লেপ্টে থাকা কষ্টাঘাত দেখার ক্ষমতা ওদের নেই। দেশ-সীমানার ওপারে বিধর্মী জালিমদের ছত্রছায়ায় বসে থাকা নিকৃষ্ট ঐ হায়েনাদের বিদঘুটে হলদে দাঁতের হাসি দেখে তারিফ করাই যেন এদের ধর্মকর্ম! আমি লজ্জিত। আমায় ক্ষমা করো।
হে মরুর বাদশাহ!
আমি অসহায় বোধ করছি। ক্ষমতা হীনতার অসহায়ত্ব আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। দাঁতে দাঁত লেগে যাচ্ছে। মুষ্টিবদ্ধ হাত ঐসব জালিমদের মাথায় নেমে আসতে চাইছে। ক্ষমতা থাকলে হুংকার ছাড়তাম। সবকিছু জ্বালিয়ে দিতাম। সীমানা প্রাচীর টপকে ওপারে গিয়ে ওদের টুঁটি চেপে ধরতাম। বিধর্মীদেরকে ক্ষমা চেয়ে ঐ নিকৃষ্ট মানবদের রক্ত ঝরাতে বাধ্য করতাম। কিন্তু আমি যে অসহায়! নিজেই নিজের মাঝে কুঁকড়ে যাচ্ছি। ইশ! কতই না ভালো হতো যদি আমার এই গুনাহের বিষে কালো হয়ে যাওয়া রক্ত তোমার ভালোবাসায় বিলাতে পারতাম। কালো রক্ত হয়ত আবারও লাল হয়ে উঠতো। পবিত্রতায় সচ্ছ হয়ে জান্নাতের উপযোগী হতো।
হে নবী! ত্রিভুবনের সর্দার!
আমায় তোমার চরণে বিলীন হতে দেও। ক্ষমা করে হৃদয় কোঠায় স্থান দেও। আমি কথা দিচ্ছি…দেশীয় জালিমদের প্রতি প্রতিশোধ তুলবো। খোদার রাহে শক্তি চাইছি। আমাকে সবল হতে দেও। আমি বারুদের মত জ্বলে উঠবো। সকল নখর ভেঙে চুরমার করবো। খোদার তাওফিকে হৃদয়টা সিক্ত হোক! আমি তোমায় কথা দিচ্ছি। তবু আমায় ক্ষমা করো।