মিডিয়া ডেস্ক : আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন আফগান সরকারের সাথে আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে একজন সিনিয়র কূটনীতিকের নেতৃত্বে একটি ভারতীয় প্রতিনিধি দল কাবুল গেছে।
গত বছরের আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরত আসার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাকিস্তান-আফগানিস্তান বিষয়ক যুগ্ম সচিব জে পি সিং এবং আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির মুত্তাকির এ বৈঠক দু’পক্ষের সম্পর্কোন্নয়নের চূড়ান্ত পর্যায় বলে গণ্য করা হচ্ছে।
এর আগে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় দোহায় অনেকটা গোপনীয়ভাবে বৈঠক করেছিল ভারতীয় কর্মকর্তারা ও তালেবান প্রতিনিধিরা। কিন্তু মানবিক সহায়তার বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রতিনিধি দলের কাবুল সফর তালেবানের প্রতি ভারত সরকারের আগের অবস্থান থেকে সরে আসার বিষয়টিই পরিষ্কার করছে।
তালেবানের আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসা সাবেক শাসক আশরাফ গনি প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠ ভারতের জন্য বিপত্তি হিসেবেই গণ্য করা হচ্ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানে কূটনৈতিক মিশন এবং দেশটিতে ভারতীয় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় ভারত।
যে কয়টি দেশ তালেবানের সাথে সম্পর্ক রাখতে চায়নি তাদের মধ্যে ভারত অন্যতম। বস্তুত ভারত কয়েক দশক ধরে তালেবান বিরোধী বাহিনীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে দিয়েছে এবং জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তালেবানের বিরোধিতা করে আসছিল।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পীড়াপীড়ি সত্ত্বেও ভারত তালেবানের সাথে সম্পর্ক রাখতে চায়নি কারণ তারা ওই গ্রুপটিকে পাকিস্তানের পরিপূরক মনে করতো। তারা অভিযোগ করে আসছিল তালেবান ভারতের স্বার্থে আঘাত করে থাকে।
আফগানিস্তানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা পাকিস্তানি একজন কর্মকর্তা বলছেন, ‘ভারতের অন্তরে যে পরিবর্তন (তালেবানের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের ব্যাপারে) তার কারণ তারা বুঝতে পেরেছে যে তালেবান এখন একটি বাস্তবতা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান তালেবান ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল।
‘যদি ভারত কাবুলে তাদের দূতাবাস পুনরায় খুলতে সম্মত হয় তাহলে তা হবে উত্তরাঞ্চলীয় জোটসহ তালেবান বিরোধীদের আরো হতাশ করবে,’ বলছিলেন ওই কর্মকর্তা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সিনিয়র কূটনীতিকদের সফরের বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়া বা তাদের দূতাবাস পুনরায় খোলার বিষয়টিও অস্বীকার করেছে।
তবে পাকিস্তানের সরকারি সূত্রগুলো বিশ্বাস করে যে এই সফরটি ভারতের প্রচার করা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের চেয়ে অনেক বেশি কিছু ছিল।
অন্য একজন কর্মকর্তা দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে বলেছেন যে তালেবানের সাথে ভারতের সম্পর্ক স্থাপনে পাকিস্তানের কোনো সমস্যা নেই যতক্ষণ না এটি দেশের স্বার্থকে ক্ষুণ্ণ করে।
সূত্র : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন