মিডিয়া ডেস্ক : মিয়ানমারে জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর দমন-পীড়নের সংবাদ প্রচার করায় দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার। গতকাল বুধবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে মাইয়েক শহরের একটি সামরিক আদালত তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ড পাওয়া দুই সাংবাদিক হলেন- ডেমোক্র্যাটিক ভয়েস অব বার্মায় (ডিভিবি) কর্মরত অং কিয়াও এবং মিজিমা নিউজের ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার জাও জাও।
ওই দুই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া খবর’ ছড়ানোর অভিযোগ এনে উপনিবেশিক আমলের একটি আইনে তাদের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ‘ভুয়া খবর’ ছড়ানো ঠেকাতে উপনিবেশিক আমলের একটি আইন সংশোধন করেছে জান্তা সরকার। গত ১ ফেব্রুয়ারি এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকে দেশটিতে চলছে অভ্যু্ত্থানবিরোধী বিক্ষোভ। চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৮৪১ জন নিহত হয়েছেন।
অং কিয়াও তাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করেছিলেন। বিক্ষোভের খবর প্রচার করায় এর আগে ডিভিবির আরও দুই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এদিকে ডিভিবি ও মিজিমাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রত্যাহার করে নিয়েছে জান্তা সরকার। ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনও বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
গতকাল বুধবার অং কিয়াওয়ের মুক্তি চেয়ে ডিভিবি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘জান্তা সরকার অবৈধভাবে অং কিয়াওকে আটক করেছে। এটা বার্মার জান্তা সরকারের স্পষ্ট জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এদিকে মিজিমা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে জাও জাওসহ তাদের পাঁচ কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাকে দ্রুত মুক্তির আহ্বান জানান তারা।
মিজিমা আরও বলেছে, তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, সাংবাদিকতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা কোনো অপরাধ নয়। তাই সব গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে অবাধে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের মনিটরিং গ্রুপের তথ্যমতে, জান্তা সরকার এ পর্যন্ত ৮৭ জন সাংবাদিককে আটক করেছে। যার মধ্যে ৫১ জন এখনও আটক রয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুই নাগরিকসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিককেও আটক করা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।