আওয়ার মিডিয়া : সরকারি পাঁচ ব্যাংকের সাড়ে ২৯ হাজার কোটি টাকার ঋণ ফেরত দিচ্ছে না রাষ্ট্রায়ত্ত ৩৩ প্রতিষ্ঠান। পাহাড়সম এ ঋণের মধ্যে নগদ ঋণ বা ফান্ডেড লোনের পরিমাণ ১৬ হাজার ৩৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আর নন-ফান্ডেড বা এলসি, ব্যাংক গ্যারান্টি ইত্যাদির বকেয়া আরো ১৩ হাজার ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ব্যাংকগুলো অনেক চেষ্টা করেও বকেয়া ঋণগুলো আদায় করতে পারছে না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বকেয়া ঋণের একটি প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের সাবেক ডিজি এবং অর্থনীতিবিদ তৌফিক আহমেদ বলেন, সরকারের উচিত এই টাকাগুলো পাঁচ ব্যাংককে দিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য বাড়বে, মূলধন ঘাটতির সমস্যা কাটবে। তা ছাড়া ব্যাংকগুলো তো প্রণোদনা প্যাকেজও বাস্তবায়ন করছে। এতেও তারা উপকৃত হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত হিসাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সোনালী ব্যাংকের পাওনা ১২ হাজার ৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। জনতা ব্যাংক দুই হাজার ৩৪০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। রূপালী ব্যাংক এক হাজার ৩৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৫৪৮ কোটি ৬৩ লাখ এবং বেসিক ব্যাংক ৪০ কোটি ৯ লাখ টাকা পায়।
বাংলাদেশ প্রতিবেদনে বলেছে, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের ছয় প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারি সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী এবং বেসিক ব্যাংকের পাওনা ৯ হাজার ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এ ছয় প্রতিষ্ঠান হলো, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন (বিটিএমসি), বাংলাদেশ জুটমিলস করপোরেশন (বিজেএমসি), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি), বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) এবং বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফআইডিসি)।
এ ছয় প্রতিষ্ঠান পাঁচ ব্যাংকের কাছ থেকে ফান্ডেড ঋণ বা নগদ ঋণ নিয়েছে আট হাজার ৬৩৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর নন-ফান্ডেড ঋণ বা এলসি, ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে নিয়েছে এক হাজার ১৬২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। পাঁচ ব্যাংক সবচেয়ে বেশি টাকা পায় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) কাছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছে পাঁচ ব্যাংক ফান্ডেড ঋণের ছয় হাজার ৬১০ কোটি ২৮ লাখ এবং নন-ফান্ডেড ঋণের আট কোটি ৯৫ লাখ টাকা পায়।