করোনাভাইরাস যে মানুষের সবকিছু ওলট-পালট করে দিচ্ছে, তার প্রমাণ দেখতে চাইলে আপনি দেখতে পারেন রাজধানীর অলিতে গলিতে দেখা যাচ্ছে স্কুল বিক্রির পোস্টার! স্বল্প বেতনের যে স্কুলগুলি হাসি-আনন্দে মুখরিত হয়ে থাকতো, সেগুলো আজ ৩-৪ মাস ধরে শিক্ষার্থীশূন্য।
যাদের সামান্য বেতনই ছিল শিক্ষকের উপার্জন সেই শিক্ষার্থী হারিয়ে শিক্ষকরাও চলে গেছেন নানা দিকে। মালিক তাই আসবাবপত্রসহ স্কুলটি বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন। তবে দুঃখের বিষয়, পোস্টার টাঙিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না ক্রেতা।
ব্যয়ভার খাড়া আছে নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কয়েক মাস পকেট থেকে খরচ চালানোর পর এবার ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড হাই স্কুল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক তদবির আহমেদ। মোহাম্মদপুরের অলিতে-গলিতে দেখা গেছে এমন পোস্টার।
তদবির আহমেদ জানালেন, এত বিজ্ঞাপন দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। দুই-একজন ফোন দিলেও তারা স্রেফ দাম জেনেই ফোন কেটে দেন।
রাজধানীজুড়ে এমন স্কুল কিংবা কিন্ডারগার্টেনের সংখ্যা হাজারেরও ওপরে। করোনাভাইরাস এসব স্কুলের মালিকদেরকে ভীষণ বিপদে ফেলে দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে বেতন পেতেন সেটা দিয়েই শিক্ষকদের সম্মানিসহ সব খরচ মিটিয়ে নিজের কাছে কিছু থাকতো। কিন্তু গত ৩-৪ মাস ধরে ভাড়াটাও দিতে হচ্ছে পকেট থেকে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, রাজধানীর অধিকাংশ পরিবারের পক্ষেই তাদের সন্তানদেরকে নামিদামি স্কুলে পড়ানোর আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। তাই তাদের একমাত্র আশ্রয় গলির ভেতরে থাকা সাধারণ মানের ছোট ছোট স্কুলগুলো।
সবমিলিয়ে কয়েক লাখ শিশু এসব স্কুলে লেখাপড়া করে থাকে। করোনার কারণে স্কুলগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হুমকির মুখে পড়বে এসব শিক্ষার্থীর লেখাপড়া। বিষয়টি নিয়ে সরকারকে তাই আলাদা করে ভাবতে হবে।
সূত্র : পাবলিক ভয়েস