শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

এবার ডিবিও সড়ক দখলের লক্ষ্য চীনের, রুখতে বিপুল সেনা মোতায়েন ভারতের !

/ ৪৭৪ পঠিত
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৬ জুন, ২০২০

মিডিয়া ডেস্ক : প্যাংগং, গালওয়ান উপত্যকার পর এবার চীনের নজর দৌলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) সড়ক, যা রুখতে দারবুক-শাইয়োক-ডিবিও সড়কজুড়ে তড়িঘড়ি বিপুল সেনা মোতায়েন করেছে ভারত। গালওয়ান উপত্যকা হয়ে কারাকোরাম গিরিপথ পর্যন্ত চলে যাওয়া এই রাস্তা লাদাখের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অংশকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। চীনকে চাপে রাখতে রণকৌশলগতভাবে রাস্তাটি ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে অধিকৃত আকসাই চীনের নিরাপত্তার প্রশ্নে ওই সড়ক বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মনে করে বেইজিং। সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের একাংশের তাই আশঙ্কা, এই ধাক্কায় ওই সড়ককেও নিজেদের কব্জায় নিয়ে আসার মরিয়া চেষ্টা তাই বেইজিং করতেই পারে।

সোমবার লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের সেনা কর্তাদের বৈঠকে সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে দু’পক্ষই সেনা কমাতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে ডিবিও সড়কের কাজ আটকে দেওয়ার তৎপরতা শুরু করে চীনা সেনা। ওই রাস্তার সমান্তরালে চীনের দিকে রাতারাতি গজিয়ে ওঠে একাধিক সেনাছাউনি। আনোগোনা বেড়ে যায় সাঁজোয়া গাড়ির। মোতায়েন হয় সেনা।

ডেপসাং এলাকার একটি বড় অংশে চীনা সেনা অনুপ্রবেশ করে বসে রয়েছে বলে এরই মধ্যে সরব হয়েছে কংগ্রেস। সহমত প্রাক্তন সেনাদের একাংশ। গালওয়ানের পরে ডেপসাং হাতছাড়া হওয়ার খবর অবশ্য বাহিনী মানতে রাজি নয়।

নর্দান কম্যান্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তার মতে, চীনা সেনা ডেসপ্যাং এর খুব কাছে ঘাঁটি গেড়েছে, যা ডিবিও সড়কেরও খুব কাছে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে লাদাখের মতো দুর্গম এলাকায় সেনা ও রসদ দ্রুত পৌঁছে দিতে ডেপসাংয়ের কাছে সম্প্রতি ভারত একটি এয়ারস্ট্রিপ বানিয়েছে। তাতে আপত্তি ছিল বেইজিংয়ের।

আকসাই চীনকে সংযুক্ত করে তিব্বত-জিংজিয়াং হাইওয়ের খুব কাছ দিয়ে গেছে ডিবিও সড়কটি। ফলে লাদাখ থেকে আকসাই চীন- গোটা এলাকায় তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নে শুরু থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার (এলএসি) সঙ্গে সমান্তরালভাবে দৌঁড়ানো ডিবিও সড়ক চীনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। অনেকের মতে, এই সুযোগে ডেপসাং পেরিয়ে ডিবিও সড়ক কব্জা করে গলার কাঁটা উপড়ে ফেলতে চাইছে চীন।

ভারত সরকার এ প্রসঙ্গে নীরব হলেও, বুধবার থেকেই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন শুরু হয়েছে সড়কজুড়ে। মোতায়েন করা হয়েছে বেশি উচ্চতায় লড়াইয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনা ও কমান্ডোকে।

সেনা সূত্রের মতে, চলতি সপ্তাহে দুটি প্যারা কমান্ডো ইউনিটকে কাশ্মীর থেকে লাদাখে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি ইউনিট রাষ্ট্রীয় রাইফেলের সঙ্গে ছিল ও দ্বিতীয় ইউনিটটি ছিল ইনফ্র্যান্ট্রি ব্রিগেডের সঙ্গে। সীমান্তে উত্তাপ ছড়ানোর পরে এ পর্যন্ত শ্রীনগর ও লে থেকে সাত ব্যাটালিয়ন সেনা লাদাখে পাঠানো হয়েছে।  এছাড়া বৃহস্পতিবার দিনভর চক্কর দিয়েছে বিমান বাহিনীর বিমানও।

সীমান্তে শান্তি ফেরানোর প্রশ্নে দু’দেশ আলোচনা চালালেও, কংগ্রেসের অভিযোগ গালওয়ান উপত্যকায় যেভাবে চীন প্রায় ১০ হাজার সেনা এবং তাদের জন্য রসদ-গোলাবারুদের ভাণ্ডার মজুত করেছে, তাতে তারা সহজে যাওয়ার নয়। কংগ্রেস নেতা পবন খেড়ার অভিযোগ, পিছু হটার বদলে চীনা সেনা গলাওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ কব্জা করে নিয়েছে। সরকারের উচিত দেশকে প্রকৃত সত্য জানানো।

এলএসি নিয়ে টানাপড়েন ঘিরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বীকারোক্তি— ভারত সীমান্তে স্থিতাবস্থা চাইলেও চীনা সেনা তা লঙ্ঘনের চেষ্টা করায় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লি এখনো চায় আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি ফিরুক।

কিন্তু তাতে কাজ না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নির্ভর করছে সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণের রিপোর্টের উপর। দু’দিন লাদাখের পরিস্থিতি দেখে দিল্লি ফিরে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়তসহ অন্য দুই সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা তার। সূত্রের মতে, বৈঠক হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও। তারপরই ঠিক হবে পরবর্তী রণকৌশল।

সূত্র- আনন্দবাজার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ