শিরোনাম
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১:৫৪ অপরাহ্ন

শ্রীমঙ্গলে ট্রেনের নিচে শিশুসন্তান নিয়ে ঝাঁপ দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা!

/ ৫৪০ পঠিত
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১০ জুন, ২০২০

ট্রেনে কাটা পড়ে পা হারানো শিশু দেব দাস

সৈয়দ সালাউদ্দিন

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ট্রেনের নিচে শিশুসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে উজ্জ্বলা রানী দাস (২৮) নামে এক গৃহবধূ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

এ সময় তার চার বছরের শিশু দেব দাসের প্রাণ বেঁচে গেলেও কাটা পড়ে যায় তার বাম পা, অপর পা-টিও আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন প্লাটফর্মের পশ্চিম দিকে রেললাইনের ওপর মঙ্গলবার দুপুরে ওই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

সিলেট থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন পাহাড়িকা এক্সপ্রেস শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে বিরতি দিয়ে ছেড়ে যাওয়ার সময় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে কাটা পড়েন ওই গৃহবধূ।

নিহত নারীর কোমর থেকে নিচের অংশ একেবারে বিছিন্ন হয়ে যায় এবং সঙ্গে থাকা বাচ্চাটির একটি পা হাঁটু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আহত শিশুটিকে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে সিলেট নিয়ে যাওয়া হয়।

নিহত উজ্জ্বলা রানী দাস মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের রাজচন্দ্র দাসের মেয়ে।

এ ব্যাপারে ওই গৃহবধূর বড় ভাই কৃষক জগৎ দাস জানান, ৫ বছর আগে কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের নন্দলাল দাসের ছেলে ওমান প্রবাসী দিলীপ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় তার বিএ পাস বোনের।

তাদের সংসারে এক বছরের মাথায় যমজ সন্তান হয়। তিন মাস পর একটি সন্তান মারা যায়। গত ছয় মাস আগে ওমান থেকে দিলীপ দাস দেশে এলেও করোনাভাইরাসের কারণে আর যাওয়া হচ্ছিল না।

তিনি বলেন, দেশে আসার পর নানা অজুহাতে প্রায়ই তার বোনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত তার বেকার স্বামী। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশও হয়েছে কয়েকবার। এ কলহের কারণেই গত এক মাস ধরে উজ্জ্বলা রানী বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন।

মঙ্গলবার সকালে উজ্জ্বলা রানী মৌলভীবাজার শহরে যাওয়ার কথা বলে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। শ্রীমঙ্গলে তাদের কোনো আত্মীয়স্বজন নেই, তিনি কেন বা কীভাবে শ্রীমঙ্গল এসেছেন, এ ব্যাপারে কেউ কিছুই জানেন না বলে জগৎ দাস জানান।

তিনি আরও বলেন, স্বামীর অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার বোন অভিমান করে দীর্ঘ প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছেলেসহ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।

তিনি এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানায় মামলা করবেন বলে জানান। এ ব্যাপারে দিলীপ দাসের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তার বোন রত্না রানী দাস ফোন রিসিভ করে জানান, তার ভাই দিলীপ দাস ট্রেনে এক পা কাটা পড়া তার ছেলেকে চিকিৎসা করাতে সিলেট নিয়ে গেছেন। ভুলে বাড়িতে মোবাইল ফোন ফেলে গেছেন বলে জানান।

একপর্যায়ে দিলীপ দাসের চাচা দীপু বাবু বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। আপনি মেম্বারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। পারিবারিক কলহে নয়, করোনাভাইরাসের কারণে বাবার বাড়িতে নাইওর ছিলেন বলে তারা জানান।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, রেলে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় যদি নিহতের আত্মীয়স্বজন কোনো অভিযোগ দেন, তা হলে আমরা তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ