সাঈদ আবরার
ঈদ ।বাঙালির আবহমান আনন্দ-উৎসব । বছর ঘুরে দু’বার বাঙালির দুয়ারে কড়া নাড়ে ঈদ। চোখ দু’টো বুজে ‘ঈদ’ ভাবতেই আমরা অনুভব করি অন্যরকম মুগ্ধতা ।
ভালোলাগা ।
পুলকিত হয় হৃদয়-জমিন ।
দোলে ওঠে হৃদয়ের সবুজিয়া “সুনবুলা” । আহা , কি সুর বাজে আকাশে বাতাসে !
দলবেঁধে চাঁদ দেখা।
ঈদের দিন প্রত্যুষে জেগে ওঠা ।ভোরে ভোরে গোসল ।
সেমাই, পিঠার ধুমায়িত পিরিচ।
ঘরময় মৌ মৌ । মিষ্টি ঘ্রাণ ।নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি ।পছন্দসই জুতো। “আনকমন” স্টাইলে পাগড়িটা বেঁধে ঈদগাহে যাওয়া। সকালের নরোম রোদে ,সবুজ ঘাসে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়া ।বাড়ি ফিরে আত্মীয়দের ঘরে ঘরে ডু মারা। দূরে, কাছে কোথাও বেড়াতে যাওয়া।
একটু সুখ সুখ সময়।
আহা,করোনায় কি এ সুখ-স্মৃতিগুলো ইতিহাস হয়ে যাবে !
ঘরবন্দী জীবনেই এসে যাবে ঈদ !
গরিব তো ‘দূর কি বাত, না জানি, কত মধ্যবিত্তের ঘরে উঠবে না ঈদের চাঁদ। নেয়া হবে না তাদের নতুন জামা, জুতোর ঘ্রান । সেমাই,পিঠা তো আয়েশি কল্পনা শুধু ; ঈদের রান্নাই বা হবে ক’জনের চুলোয় ! ……..
ওগো আল্লাহ ! আমাদের ক্ষমা করো! আমরা জানি -আমরা গুনাহগার। আমরা মানি -গুনাহ করেছি বেশুমার। …সিরিয়ার মজলুম শিশুরা যখন কেঁদেছে; আল্লাহুম্মাখরিজনা মিন হাযিহিল ক্বারয়াতিজ জলিমি আহলুহা –বলে বলে শুকিয়েছে চোখের পানি। আমরা সাড়া দেয়নি।
ফিলিস্তিনের পাথর শিশুরা যখন ঈদের সকালেও জালিম ইহুদীদের হত্যাযজ্ঞের শিকার তখনো আমরা এর প্রতিবাদ করিনি ।শান্তনার বাণী টুকু শুনাইনি কোনদিন। বছর বছর ধরে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরীদের জন্য করিনি কিচ্ছুটি । বারবার “অভ্যন্তরীণ বিষয়”বলে চেপেগেছি নিজেদের। বড়ো জুলুম করেছি আমরা !মালি-ক, মাফ করে দাও না এবারের মতো!
তুলে নাও করোনার এ আজাব! করোনা পরবর্তী পৃথিবীটা করে দাও আমাদের! মুসলিম উম্মাহর ভাগ্যাকাশে উঠাও বিজয়ের আল হেলাল !দাও ‘ফাতহে মুবিন’ ।
সত্যি সত্যিই আমরা হয়ে যাব ‘কা যাছাদিন ওয়াহিদাহ ।ইনশাআল্লাহ!
লেখক: শিক্ষার্থী, জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ