ইবনে উমর
আমাদের ঘরের সঙ্গে লাগোয়া দেড় হাত একটি ডুমুরগাছ। আমি সাধ করে বারবার ওখানে ছুটে যেতে চাই না। তবুও অগত্যা আমাকে বার কয়েক ওখানে যেতেই হয়।
কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত নয় গাছটি। এই মাত্র গণনা করে দেখলাম, আন্ডা-বাচ্চা মিলিয়ে পাতা আছে মোটে ঊনিশটি।
দুটি পাতা আপাদমস্তক পরস্পর জড়িয়ে আছে।আপনা থেকেই ওরা কোলাকুলি করছে,এমন নয়। শৈল্পিকভাবে ওদেরকে আলিঙ্গন করিয়ে দিয়েছে এক নিপুণ শিল্পি, একটি টুনটুনি পাখি।
ওটিই আমার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু!
টুনির বাসাটি দেখার পর আমার মাঝে অদ্ভুত এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। টুনির বাসাটি কেন্দ্র করে এই যৌবনে আমার শৈশব আবার ফিরে এসেছে।ফলে আমার বারবার ওখানে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে। আবার বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে আকল-বুদ্ধি হয়েছে সেটাও ক্রিয়াশীল।
ফলে পাখিটির প্রতি মমতাবশত ওখানে যাই না।পাছে না পাখিটি জীবনাশঙ্কায় এখান থেকে অন্য কোথাও চলে যায়।
আজ পাখি খাবার খুঁজতে যায়, এমন একটা সময় দেখে একেবারে বাসাটির অন্তর পর্যন্ত উঁকি দিয়ে দেখলাম। বাসায় একটি ডিম আছে। টুনির ডিম টুনির ডিমের মতোই বড়।
কিছুদিন পর হয়তো বাচ্চা হবে।নিয়ত করেছি আগামি দশ দিন বাসার পথ মাড়াব না। বাচ্চাটা স্বস্তির সাথে এসে পৃথিবীর হাওয়া-বাতাস গ্রহণ করুক। এখন ওদিকে আমার নিয়মিত উপস্থিতি টের পেলে টুনি হয়তো ডিম ফেলেই অন্যত্র পাড়ি জমাবে।
পাখির প্রতি এই যে আমার স্নেহ-মমতা, এটাই তো মনে হয় এই বয়সের পিতৃস্নেহ,পিতৃমমতা! এতদিনে মনে হয় সত্যি সত্যি আমি বাবা হওয়ার উপযুক্ত হয়েছি!
রোজনামচার পাতা : ১৫.০৪ ২০২০