আনীস বিন সাইফ
প্রগতির উৎকর্ষের যুগেও গ্রামবাংলার সেই মনভোলানো দৃশ্য একেবারে বিলীন হয়ে যায়নি । যদিও শহরের বাতাসে গ্রাম আজ প্রায় বিলীন । তবুও কিছু গ্রাম এখনো আপন স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে । এমনই একটি গ্রাম উযিরপুর।বাড়িগুলো পাশাপাশি । লোকালয়ের সাথে লেগে আছে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ ।
এখনো ফজরের আযান শুনে ঘুম ভাঙ্গে গ্রামের মানুষের। কেউ তো মসজিদে যায় । অন্যরা তখনি উঠে মাঠে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় । সূর্য ওঠার আগেই তারা ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে । কখনো হাতে কাস্তে – কোদাল কখনো কাঁধে লাঙ্গল – জোয়াল ।
সবচেয়ে ভালো লাগে শীতকালীন দৃশ্য ।কুয়াশার চাদরে মোড়া পুরোটা গ্রাম। সামনে কিছুই দেখা যায় না ।সূর্য ওঠার পর ধীরে ধীরে উদ্ভাসিত হয় কুহেলিকাস্নাত ভোরের সকাল! মুক্তা দানার ওপর মিষ্টি রোদ পড়ে চিকচিক করে ।বাড়ন্ত ধানগাছ শিক্ত হয় শিশিরের কোমল পরশে।
দূর থেকে দেখলে মনে হয় সবুজে ওপর কেউ সাদা চাদর বিছিয়ে রেখেছে । দূর্বাঘাস এসময় নতুনত্ব লাভ করে। শিশির ভেজা ঘাসের উপর খালি পা রাখতেই দেহ মনে অন্য রকম এক শিহরণ বয়ে যায় ।শীতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সৌন্দর্য এই শিশির আর কুয়াশা ভেজা সকাল । তার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে সোনালী রোদ । শুধু সৌন্দর্য উপভোগের জন্য শীতকে উপেক্ষা করে ছুটে যায় প্রকৃতি প্রেমীরা আলতো করে হাত বুলায় ধান গাছের পাতায় জমে থাকা বিন্দু বিন্দু শিশিরের গায়ে ।
কিছু হাতে উঠেআসে আর কিছু পাতার গা বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়ে ফলে প্রকাশ পায় তার আসল রূপ লাবণ্য। চাদরের নিচে লুকিয়ে থাকা সবুজ সৌন্দর্য ।তনুমনে নাড়া দেয় অপার্থিব এক অনুভূতি । কিছু সাদা কিছু সবুজ।
শহরের মানুষ কি এই দৃশ্য কল্পনাও করতে পারবে ইট পাথরের বেষ্টনীতে আবদ্ধ থেকে!! আমিও বর্তমানে এই নৈসর্গিক পরিবেশ থেকে অনেক দূরে ।কিন্তু সেই সবুজ আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে ।একটু শীতল পরশ দিতে। কুয়াশাস্নাত শিশিরসিক্ত সকালের!!